Sunday, July 10, 2016

লর্ডসে আমিরকে চান না সোয়ান

আমিরকে লর্ডসের মাঠে মানতেই পারবেন না সোয়ান।স্পট ফিক্সিংয়ের শাস্তি ভোগ করে মোহাম্মদ আমিরের ইংল্যান্ডে ফেরাটা যে খুব কুসুমাস্তীর্ণ হবে না, সেটা জানা কথাই। তারপরেও ব্রিটিশ গণমাধ্যমের একটা অংশ পাকিস্তানি পেসারের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। আবার সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটারসহ অনেকেই স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে নিষিদ্ধ ও জেল খাটা আমিরকে ঠিক মেনে নিতে পারছেন না। ইংল্যান্ডের সাবেক স্পিনার গ্রায়েম সোয়ানও এই দলের। এত সব কুকীর্তির হোতা আমিরের লর্ডসের মাঠে পা রাখাটাই নাকি তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দিতে যথেষ্ট।

ডেইলি সান পত্রিকায় লেখা এক কলামে সোয়ান বলেছেন, ‘আমির ক্রিকেট খেলার নৈতিক মূল্যবোধে আঘাত হেনেছে। তাকেই কিনা লর্ডসের মাঠে ফেরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে! এই লর্ডসেই তো সে স্পট ফিক্সিংয়ের কাণ্ড ঘটিয়েছিল!’
লর্ডসে আমিরের উপস্থিতি তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলবে বলে জানিয়েছেন সোয়ান, ‘আগামী বৃহস্পতিবার আমির যখন লর্ডসের মনকাড়া সবুজ মাঠে পা রাখবে, ওই দৃশ্যটা আমাকে মানসিকভাবে অসুস্থ করে ফেলবে। আমার মতে, যে অপরাধ আমির করেছে, সে জন্য তাঁকে আজীবন নিষিদ্ধ করা উচিত ছিল। যে ছেলেটি কিছু অর্থের বিনিময়ে নিজের আত্মাকে বিকিয়ে দিতে পারে, তার উচিত অবিরাম পরিণতি ভোগ করা। অথচ আমিরকে তা করতে হয়নি।’ সোয়ান তাঁর লেখায় সমালোচনা করেছেন ক্রিকেটের নীতিনির্ধারকদেরও, ‘আমির যে ধরনের অপরাধ করেছিল, সে অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কোনো যেকোনো ধরনের শক্তিশালী রক্ষাকবচ তৈরিতে ক্রিকেট প্রশাসকেরা ব্যর্থ হয়েছেন।’
২০১০ সালে লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিং-কাণ্ডে অভিযুক্ত হন মোহাম্মদ আমিরসহ আরও দুই পাকিস্তানি ক্রিকেটার সালমান বাট ও মোহাম্মদ আসিফ। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এই তিন ক্রিকেটারকেই সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিভিন্ন মেয়াদে নিষিদ্ধ করা হয়। এমনকি কারাভোগও করতে হয়েছে তাঁদের। পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আমির পাকিস্তান দলে ফিরলেও বাট ও আসিফের এখনো ফেরা হয়নি।
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরে পাকিস্তান দলে ফেরেন আমির। সেখানে আমিরকে দর্শকদের বিদ্রূপ সহ্য করতে হয়েছে। তাঁকে পাকিস্তান দলে ফেরানো হবে কি না, এ নিয়েও তীব্র বিতর্ক হয়েছে। পাকিস্তানের অনেক সাবেক ক্রিকেটারই আমিরকে পাকিস্তান দলে ফেরানোর পক্ষপাতি ছিলেন না।
ইংল্যান্ড সফরের শুরুটা অবশ্য আমিরের ভালোই হয়েছে। সমারসেটের বিপক্ষে অনুশীলন ম্যাচে ৩৬ রানে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। বিবিসি তাদের মোবাইল সংবাদসেবায় এই ম্যাচের সংবাদ দিতে গিয়ে হেডলাইন করে, ‘ইংল্যান্ডে ফিরেই ৩ উইকেট পেলেন স্পট-ফিক্সার আমির’।
ইংলিশ টেস্ট অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুকের মতে, এবারের ইংল্যান্ড সফরে আমিরকে যথেষ্ট কঠিন সময় অতিক্রম করতে হবে। এই কঠিন সময়টা তাঁকে বেশি দেবে মাঠের দর্শকেরা। এমন প্রতিক্রিয়ার দরকারও আছে বলে মনে করেন তিনি, ‘কেউ যখন এ ধরনের অপরাধ করে, তখন শাস্তির চেয়েও তাঁকে পরিণামটাই বেশি ভোগ করতে হয়। এটা তাঁকে মেনে নিতেই হবে। এর সঙ্গে মানিয়েও নিতে হবে।’

No comments:

Post a Comment