সকল বয়সের মানুষের সাঁতার জানা প্রয়োজন। সাঁতার হচ্ছে একটি অন্যতম ব্যায়াম। পৃথিবীতে যত প্রকার ব্যায়াম আছে তার মধ্যে সাঁতার শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম। সাঁতার জানা থাকলে একদিকে পানির বিপদ থেকে জীবনকে রক্ষা করা যায় অপরদিকে নিয়মিত সাঁতার চর্চার মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখা যায়। তাই সাঁতার চর্চার কোন বিকল্প নেই।অামাদের দেশে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জানা যায় অন্য যে কোনো কারণে শিশুমৃত্যুর চেয়ে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। আর এসব ঘটনা ঘটে সাধারণত পরিবারের অসচেতনতার কারণে। তবে পাঁচ থেকে ১৭ বছর বয়েসীদের মৃত্যু হয় সাঁতার না জানার কারণে।
বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর ৪৩ শতাংশই ঘটছে পানিতে ডুবে। দেশে প্রতি ত্রিশ মিনিটে একটি শিশু মারা যাচ্ছে পানিতে ডুবে। আর বিশ্বে বছরে ১৭ হাজার শিশু পানিতে পড়ে মারা যায়।
খাল-নদী-পুকুর-দীঘির দেশ বাংলাদেশে এত বিপুল সংখ্যক শিশু সাঁতার না জানার কারণে কেন মৃত্যুবরণ করে তা বিস্মিত করেছে সচেতন মহলকে। এর জন্য প্রধানত দায়ী করা হয়েছে পরিবারের অসচেতনতাকে।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যান্ড ইনজুরি সার্ভের প্রতিবেদন অনুযায়ী সাঁতার না জানার কারণেই শিশুরা ডুবে যায়। সাধারণত দুর্ঘটনাগুলি ঘটে সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টার মধ্যে যখন মায়েরা সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। ফলে এসময় সন্তানদের ভালোমতো খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয় না তাদের।
এর জন্য অবশ্য আমাদের বর্তমান সমাজব্যবস্থাও কম দায়ী নয়। প্রথমত যারা শহরে বসবাস করেন তাদের পক্ষে সন্তানদের সাঁতার শেখানোর মতো কোনো সুযোগ নেই।
প্রয়োজনীয় সুইমিংপুল না থাকা এবং নদী বা লেকের পাড়ে ঘনবসতির কারনে পর্যাপ্ত ঘাট না থাকার কারনে সবার পক্ষে সাঁতার শেখানো সম্ভব হয়ে ওঠছে না।
তাছাড়া আর্থিক অবস্থার পরিবর্তনের ফলে অনেক পরিবার এখন পুকুর,নদী বা লেক ব্যবহার করে না।
টিউবওয়েল বা ডিপটিউিবওয়েলের মাধ্যমে পানির ব্যবস্থা করে বাড়ির ভেতরেই তারা গোসলখানা ব্যবহার করেন। ফলে শুধু শহরের নয় গ্রামের অনেক শিশু এখন সাঁতার শেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
শুধু সাঁতার না জানার কারণেই যদি ৪৩ শতাংশ শিশু মৃত্যুবরণ করে থাকে তবে বিষয়টি উদ্বেগের কারণ। এ বিষয়ে সরকারি পদক্ষেপের পাশাপাশি অভিভাবক বা বাবা-মাকে অগ্রণী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজ সন্তানের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে সর্বাগ্রে। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও একটি ভূমিকা পালন করতে পারে। বছরের কোনো একটি সময়ে স্কুলের উদ্যোগে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে হ্যাঁ তার জন্য প্রয়োজন আগে সুইমিং পুলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা। জেলা প্রশাসন, পৌরসভা এবং উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে গুরুর্ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
Sunday, September 25, 2016
সাঁতার শেখার প্রয়োজনীয়তা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment