Sunday, September 4, 2016

মাদক-জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমাদের যুব সমাজকে ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় রাখতে পারলেই কেবল সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের ভয়াবহতা থেকে তাদের মুক্ত রাখতে পারবো।'

রোববার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দেশসেরা ক্রীড়াবিদদের মাঝে ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন। খবর বাসসের

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যুবসমাজের মাঝে শৃঙ্খলাবোধ, অধ্যবসায়, দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যপরায়ণতা এবং দেশপ্রেম সৃষ্টি করে। আমরা তাদেরকে যতবেশি খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে পারবো ততবেশি তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকবে।'

খেলাধুলার সাথে স্বাস্থ্য ও মনের একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সুস্থ দেহ মানেই সুস্থ মন। খেলাধুলা জীবনকে করে সুন্দর ও পরিশীলিত।'

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ধারাবাহিক সাফল্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপও জয় করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে দাবির প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক স্পোর্টস ডে ৬ এপ্রিলকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে পালনের কথাও অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন।

দেশের স্বাধীনতা-উত্তর ক্রীড়াঙ্গণের উজ্জ্বল নক্ষত্র আবাহনী ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পদক (মরণোত্তর) ২০১১, বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান ২০১২ সালে এবং ২০১১ সালে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট এ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হন। মোট ৩২ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে এই পদক প্রদান করা হয়।

দেশের বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের সম্মানিত করতে ১৯৭৬ সালে জাতীয় ক্রীড়া পদক চালু করা হয়। এ পর্যন্ত মোট ১৮৮ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব এ পদক পেয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের দেশের যুবসমাজ আজ নানাভাবে বিপথগামী হচ্ছে। মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের দিকে পা বাড়াচ্ছে। এ যুবসামজকে যদি আমরা ক্রীড়া কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সক্রিয় রাখতে পারি তাহলে আমরা দেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে পারবো।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যুবসমাজের মাঝে শৃঙ্খলাবোধ, অধ্যবসায়, দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যপরায়ণতা এবং দেশপ্রেম সৃষ্টি করে। আমরা তাদেরকে যতবেশি এই খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে পারবো ততবেশি তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকবে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সুস্থ দেহ থাকলে একটি সুস্থ মনও থাকবে। তখন আর মনটা এদিক অদিক যাবে না। এখন যেমন একটা অসুস্থতা দেখা যাচ্ছে। এই যেমন জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস বা মাদকাশক্তি এগুলো মানুষের মন, মানসিকতা এবং স্বাস্থ্য নষ্ট করে দিচ্ছে। সমাজকে কলুষিত করে দিচ্ছে। কাজেই এখন থেকে আমাদের যুবসমাজ এবং সবাইকে ফিরিয়ে আনতে হবে। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমি মনে করি- আমাদের খেলাধুলার আরো বেশি সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।'

এসব দিকে চিন্তা করেই তার সরকার ছেলে-মেয়েদেরকে খেলাধুলায় যতবেশি সম্পৃক্ত করা যায় সেই চিন্তা-ভাবনা থেকে প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ছেলে মেয়েদের জন্য প্রাধমিক পর্যায় থেকেই আলাদা আলাদা প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা। এই আয়োজনটা সারা বাংলাদেশেই সাড়া জাগাচ্ছে এবং অনূর্ধ্ব ১৬ (মহিলা) দলের চ্যম্পিয়ন হবার গৌরবের পেছনে এই টুর্নামেন্টের ভূমিকা রয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ক্রীড়া উপ-মন্ত্রী আরিফ খান জয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্র্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকতার উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

No comments:

Post a Comment