Wednesday, January 11, 2017

পাহাড়ের ক্রিকেটার মুজাহিদ বাবু

খাগড়াছড়ি:
পাহাড়ের ক্রিকেট জগতে অনন্য নাম মুজাহিদ বাবু। যার নাম শুনলে ব্যাটসম্যানের হাটু কাপে, আবার বোলারদের তুলোধুনো দিতে যার ব্যাটে ঝড় উঠে। অথচ স্থানীয় প্রশাসন,  জেলা ক্রীড়া সংস্থার পূর্ববর্তী কর্মকর্তাগণসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর উদাসীনতার কারনে এবং অদৃশ্য শক্তির ছোবলে পাহাড়ে নিভৃতে কাদছে মুজাহিদের ক্রিকেট প্রতিভা! স্থানীয় পর্যায়ে সময়োপযোগি উদ্যোগের অভাব ও জাতীয় টীমের হর্তাকর্তাদের নজরে না পড়ার কারনে মুজাহিদ বাবুর ন্যায় পাহাড়ের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। পাহাড়ের ক্রিকেট প্রেমীদের ক্ষোভ পাহাড়ের ক্রিকেটার এমন বাঘের গর্জন ঢাকায় পৌঁছেনি। তবুও থেমে নেয় মুজাহিদ। কঠোর অনুশীলন, বিভাগীয় পর্যায়ের কৃতিত্ব থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র অদৃশ্য শক্তির ছোবলেই ক্রিকেটার মুজাহিদ পায়নি জাতীয় টীমের খেলার সুযোগ !

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় পর্যায়ে যেভাবে কৃতিত্ব অর্জন করেছে মুজাহিদ বাবু তেমনি পিছিয়ে নেয় বিভাগীয় পর্যায়েও। খাগড়াছড়ি জেলা দলে অনুর্ধ ১৮ খেলার সুযোগ পেয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দলে দুই ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলার বিভাগীয় ক্রিকেটে অলংকিত করেছে এ ক্রিকেটার।২০০৮ সাল থেকে পাহাড়ের ক্রিকেট ও জেলা ক্রীড়ার সংস্থার একাধিক রেকর্ডও তার থলে। অথচ অদৃশ্য শক্তির কারনে অনুর্ধ ১৯ দলে খেলার আবেদন করার পরও অদৃশ্য শক্তির ছোবলে স্বপ্নের জাতীয় টীমে খেলার সুযোগ পায়নি এ ক্রিকেটার। জানা যায়, চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার লীগে এ ক্রিকেটার স্থানীয় ফ্রেন্ডস ক্লাবের পক্ষে ৫বছর চুক্তিতে খেলে। পাশাপাশি ২০১১ সালে ঢাকায় ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রে ১ম বিভাগ লীগে খেলার সুযোগ পায়।

খাগড়াছড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার একাধিক সূত্র জানায়, স্থানীয় লীগে পর পর সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হিসেবে কৃতিত্বসহ একাধিক কৃতিত্ব রয়েছে মুজাহিদ বাবুর।  এদিকে, ক্রিকেটার হিসেবে পাহাড় থেকে জাতীয় টীমে সুযোগ পাওয়ার স্বপ্ন লালন করে আসা মুজাহিদ তার প্রতিভা ছড়িয়ে দিতে নিজ উদ্যোগে জেলায় ২টি কোচিং লেবেল শেষ করে “খাগড়াছড়ি ক্রিকেট একাডেমী” গড়ে তোলেছেন। এ একাডেমীতে সপ্তাহে ৩দিন কোচিং করানো হচ্ছে বিনামূল্যে। মুজাহিদ বাবু জানান, তার গঠিত একাডেমির ক্রিকেটাররা স্থানীয় লীগ, স্কুল পর্যায়ের ক্রিকেট লীগ ও জেলার বয়স ভিত্তিক টুর্ণামেন্টে কৃতিত্বের সাথে ক্রিকেট খেলছে। ভবিষ্যতে এই একাডেমির ক্রিকেটাররা জাতীয় টীমে প্রতিনিধিত্ব করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরও জানান, পাহাড়ের ক্রিকেটের উন্নয়নেবর্তমান কমিটির সকলেই আন্তরিক। বিশেষ করে, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক জুয়েল চাকমা, পরিমল কর্মকার ও বৈরী মিত্র চাকমা। বর্তমান কমিটির আন্তরিকতার কারনে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে ক্রিকেটে প্রান ফিরেছে এবং সপ্তাহে তিনদিন প্র্যাকটিস করার সুযোগ পাচ্ছে ক্রিকেটাররা।খোজ নিয়ে জানা গেছে, পাহাড়ের উদীয়মান ক্রিকেটার মুজাহিদ বাবু ক্রিকেটের পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতায় নিজেকে গড়ে তোলেছেন। অনার্স পাশ করে খাগড়াছড়ি পৌরসভায় কর্মরত রয়েছেন।  স্থানীয় ক্রিকেট প্রেমীদের দাবী, জাতীয় টীমে খেলোয়ারদের ন্যায় পাহাড়ের মুজাহিদ বাবুরও প্রতিভা রয়েছে। পাহাড়ের আগামীর ক্রিকেটাররাও তার একাডেমীর মাধ্যমে কৃতিত্ব অর্জন করছে। স্থানীয় সাংসদ সহ জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নজরে আসলে এ ক্রিকেটারের স্বপ্ন পূরণ হবে।

No comments:

Post a Comment